লাবন্যের মূর্ছনায়

অন্ধকার পৃথিবী

আকাশের বুকে মায়াবী চাঁদ
একটু একটু করে লুকিয়ে যাচ্ছে,
নির্ঘুম রাত জেগে বসে আছি আমি একা,
স্বপ্ন দেখা হয়না এখন,
শুধু অপেক্ষা তোমারি,
সোনালি ভোর আসবে বলে।

প্রতিটি রাত জেগে থাকা ছেলেটি,
হয়তো একদিন আর রাত জাগবে না,
তার পৃথিবীটাই হয়ে যাবে অন্ধকার রুপ।

আর দেখা হবে না,
সোনালি সকাল
দেখা হবে না তোমার হাসি ভরা মুখ,
আলতা পায়ে নদীর ঘাটে,
হবেনা আর কোনদিন দেখা হবেনা।

একদিন চলে যাবে ছেলেটি,
সব মায়ার বাঁধন ছিন্ন করে,
ঘুমিয়ে যাবে অন্ধকার পৃথিবীতে,
আর জাগা হবে না নির্ঘুম রাত।

স্বপ্ন গুলো হয়ে যাবে একা,
তাদের নিয়ে চোখের পর্দার সামনে
আর রাখা হবে না কোনদিন।।

হবে না আর ছোঁয়া তোমার হাত দুটি,
রাখা হবেনা চোখে চোখ,
হবেনা আর দেখা লম্বা কেশ ছেড়ে দিয়ে,
পা ঝুলিয়ে বসে থাকা নদীর পাড়ে,
হবেনা আর কোনদিন দেখা হবেনা।

ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়

আমার শব্দতো তোমার কর্ণকুহর ভেদ করার কথা নয়!
তোমার দৃষ্টিসীমা থেকে যোজন যোজন দূরে থাকা এই আমার
বেদনার নীলচে আলোকরশ্মিটা তোমার কর্ণিয়া ভেদ করে
রেটিনার কোন্ কোষে ওতো পৌছানোর কথা নয়!
আমিতো তোমার আখিঁতে ঢেলে দেইনি
দু’ফোঁটা লোনা জল!
তবে কি করে বুঝলে প্রিয়তমা?
তবে কি তোমার ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়কে ছুঁয়েছে আমার দীর্ঘশ্বাস ?
তাই কি আমার জন্যে পাঠিয়ে দিলে এক আঁজলা প্রেম ?
আমিতো তোমার করতলে গুঁজে দেইনি
বিরহী শ্লোকের একটুকরো পংক্তি!
আমিতো বাতাসে ছড়িয়ে দেইনি
পুষ্পিত কষ্টের ঝাঁঝাল ঘ্রাণ!
যা কিনা বাষ্পিত হয়ে প্রবেশ করবে তোমার হৃদরন্ধ্রে।
হৃদয়ে থেকে থেকে স্মৃতিদের মৌন মিছিল আজ বড়ই ক্লান্ত।

চিঠি

তবুও, নিশ্চিত যেকোনো সময়
আসবে ডাক নীল খামে ।
যদিও তেমন প্রস্তুতি নেই আমার।
অন্য কোথাও নয়,প্রকৃতিই স্বর্গ –
গাছের সবুজ-আভায় মিষ্টি রোদের খেলা,
শাখায় শাখায় পাখির সু-মধুর কলতান ।
জীবন চলেছে জীবনের ছন্দে,
জীবনের রথ থেমে নেই ।
অনেক দূরে আকাশের গায়ে
ছিটেফোঁটা মেঘ,
নবান্নের গন্ধ বাতাসে,
রাসযাত্রার ধূম,
সুন্দর সময়ের সতেজ অনুভব
কুয়াশার আবেশ মন্থর আবছা।
ভাবনাগুলোও এখানেই নানা-ভাবে আবর্তিত
মাছেদের উল্লাস নদীর জলের মৃদু স্রোতধারায়,
মন পড়ে থাকে এখানে সেখানে,
ভালবাসার বিস্তীর্ন হৃদয় জুড়ে।

ইচ্ছা

আমি শুধু পেতে চাই যেতে চাই
চিরকাল তোমার স্নিগ্ধ সান্নিধ্যে ।
এখানে চরম নৈরাজ্যে আর পারি না
উন্মুখ তোমার সন্নিধানে আকুল আমি
মণি মুক্তা খচিত জীবনের আবহ
চাইনা আমার সূর্য -চন্দ।
কাতর স্বরে ব্যাকুল আকুতি…
আমারে নাও,এখনি নাও ।
আমার আমৃত্যু স্বপ্নে সব সময় সকল বৈচিত্র্যে
যত দূরেই যাই আমি যে প্রান্তেই থাকি
ক্ষত বিক্ষত অন্তরে আমার
শুধুই তুমি শুধুই তুমি !

গোধূলী বেলা

ধূসর বিকেল হলেই তুমি থাকবে চায়ের কাপে
ক্লান্তিগুলো রাখবে ঢেকে জটিল সকল চাপে!
দুঃখগুলো রাখব দূরে উড়িয়ে সুখের ঘুড়ি,
শক্ত হাতে ধরব লাটাই খেলব লুকোচুরি!
রাত্রি ছুঁয়ে জোছনা মেখে ঘুমহারানো চোখে
এক পলকে থাকব চেয়ে কেবা মোরে রোখে।
একটু পরেই রাত্রিটাকে ছিনিয়ে নেবে কেউ
মনের উঠোন ভরে আছে এক সমুদ্র ঢেউ।
ফুলের বনে মৈামাছি হয়ে ঘুরবে কুসুম গলি
জেনে রেখ তুমি আমার প্রথম ফোঁটা কলি।
হূদয়পুরে নামছে শ্রাবণ বইছে অঝোরধারা,
কেমন করে বাঁচব বল এই তোমাকে ছাড়া!

একাত্মতা

বুকে হাত বুলিয়ে দেয়
ভাল থাকি এই আবেশেই,
নয়ত ভাল থাকার ভান করি,
ঝাপিয়ে পড়ি কল্পিত বুকে,
তুমি দ্বন্দ্বের আকাশে ঘনিয়ে আসা মেঘে
বৃষ্টি ভিজবে বলে দূরে থাক এ ভাঙ্গা-ডানা পাখির থেকে।
পাখি তবু সে চক্ষু বুজেই থাকে,
ছেঁড়া সূর্য দেখবার আশায়।

প্রলাপ

আমারী হয়তো ছিল সব ভুল।
রূপ বৈচিত্র নিয়ে প্রকৃতি আমার কাছে
ফ্যাকাশে হয়ে যায় ।
চিরকাল বন্দী হয়ে যাই আমি
বদ্ধ উন্মাদ প্রলাপের কাছে।
মাতোয়ারায় পাগল করে তোলে
তোমার ফুলের কুসুম সুগন্ধ আমাকে
বেমালুম আমি হেরে যাই স্বার্থপরতার কাছে ।
তোমার দিগন্ত বিস্তৃত চুলের অবিন্যস্ত সর্পিল
বিষভার বহন করার ক্ষমতা অবশিষ্ট নেই।
এই হেমন্তে কাশফুলে ছেয়ে গেছে ,
তা তোমারী জন্যে- তোমায় আর আকৃষ্ট
করে না আমার মূল্যহীন প্রেম।
হারিয়ে যাই বড় চেনা বড় জানা এই লোকারণ্যের ভীরে
অন্ধকারে সমর্পণ করি আমি নিজস্ব সত্ত্বাকে ।

জবাফুল

সেদিন বেলাশেষে তুমি
একটি রক্তজবার কথা বলেছিলে;
নোনাজলে ফুটবে কি সেই জবাফুল ?
ভাসাবে কি তরী রক্ত-প্লাবনে?
রাতভর অশ্রু-স্নাত
মেঘেদের গায়ে ধূসর জামা
তোমার অবয়বে নিবিষ্ট শঙ্খচিল-ডানা
শিথানের পাশে গুটিসুটি জোনাক-তারা—
তুমি আমাকে একটি জবাফুলের কথা বলেছিলে…
নিঝুম বনের বুক চিরে যে নদী চলে গেছে
আমি তার নাম জানি না
তুমিও তো তাকে ভুল নামে ডাকো !
স্বচ্ছ কাচের দেয়াল ভেঙে
তুলে আনো প্রভাত-কুসুম তরী…
হে নিষ্ঠুর প্রিয়তমা ! প্রবোধ দিও না !

তোমায় পাবো বলে

রাত অন্ধকার বটে, তোমাকে পাবার আকাঙ্ক্ষা যেন বন্য হয়ে ওঠে
জানি শরীরের ভাজে,অস্তিত্বের যন্ত্রনায়, এ আমার আসহায় আর্তনাদ।
এত অসহায়ত্বের মাঝেও শুধু তোমাকে চাই।
তুমি কি তোমার মনের কোঠরে চিৎকার করে ওঠো?
ভালবাসার ক্ষুধায় তুমিও কি কাতর হও আমার মতো?
দূর থেকে ভেসে আসা বাঁশির সুরে মনটা ছটফটিয়ে ওঠে
ভীষন অসম্ভবের মাঝে আমি তোমাকে চাই,
ঠিক যেমন করে তুমি চেয়েছিলে আমাকে।
একসময় এখানকার বাতাস বড় ভালবাসতো আমাদের,
বিচ্ছিন্ন মেঘগুলো আর দমকা বাতাসে টেবিলসহ বইগুলো কাঁপে
নদীতে মাঝির গান ভাসে, মনে হয় মনটার এখনো বয়স হয় নি।
কতবার কল্পদৃষ্টিতে তোমার চোখে আলপনা এঁকেছি,
দু’বাহু বাড়িয়ে জড়িয়ে ধরেছি বন্ধনের শিকলে আঘাত হানতে…..।
রৌদ্রছায়ার মায়াবেলায় রাত দিনের নিয়মের বেড়ীতে
চুপি চুপি বলেছিলাম পরম সত্যটি, তোমাকে চাই আমি।
খেয়ালী বাতাসের চেয়েও ভয়ংকর ছিল আমার চাওয়া
অপেক্ষার প্রহর শেষ হয় না, তাই চোখের সাগর আজ রক্তস্রোত..।

কবিতা শোনাবে

তুমি আমার পাশে বসে একটা কবিতা শোনাবে ?
তোমার সাথে আমার এক অন্যরকম সেতু হবে মনে মনে
তুমি আমায় কবিতা শোনাবে আজ রাতে…!
আর কিছুক্ষণের ভেতরই এলোমেলো হয়ে যেতে যাচ্ছে সব…
তুমি আমার পাশে বসে একটা কবিতা শোনাবে কি?
একটা ব্যক্তিগত কষ্টের সর্বজনিন হয়ে ওঠার কবিতা.
আমার ভেতর কবিতা শোনার এক আকুল তৃষ্ণা;
স্পর্শহীন ভালোবাসার মতো তোমার সাথে আমি কবিতার সম্পর্ক পাতাবো।
আর কেউ জানুক না জানুক তুমি তো একদিন জানবে যে তুমিই আমার কবিতা!
তুমি আমাকে একটি কবিতা শোনাবে আজ রাতে?
দেখো আমি চলে যাচ্ছি আজ হতে দশ বছর আগে
আমার কোন সময়ের এর প্রয়োজন নেই,
এই দেখো আমি ওখানে পৌঁছে গেছি,
আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি ঘটনা প্রবাহ কিংবা দিনাতিপাত
এক পুতুল পুতুল খেলা।
কিছু গনদেবতা আর দেবী,
একটা মিথ্যের মঞ্চ।
আমার ভীষণ অস্থির বোধ হচ্ছে,
আমি ঐ সময় হতে এখানে ফিরে আসতে চাই
তুমি আজ রাতে একটা কবিতা শোনাবে আমায়?
আর কিছুক্ষণের ভেতরই এলোমেলো হয়ে যেতে যাচ্ছে সব…
তুমি আমার পাশে বসে একটা কবিতা শোনাবে কি?
আমার ভেতর প্রচণ্ড এক অস্থিরতা,
আমার রাতজাগা তাঁরাদের মতন অসুখ করেছে।
তুমি আমাকে একটা কবিতা শোনাবে ?
আমি চুপ করে বসে কবিতা শুনব তোমার কণ্ঠে।
তুমি জীবনানন্দ হবে কি!
শোনাবে একটি কবিতা?
যে কোন কবিতা নয়,
একটা ব্যক্তিগত কষ্টের সর্বজনিন কবিতা ।

বিচরণ

যদি আমায় উপলব্ধি করতে,
তাহলে বুঝতে,
আমার হৃদয়ের গহীনের শব্দ ।
শুনতে পেতে,
আমার হৃদয়ের হৃদ স্পন্দন ।
যেখানে শুধু তোমার বিচরণ ………
খুঁজে পেতে,
কারনে অকারনে তোমার অজস্র কারন ।
বুঝে নিতে,
কতো গভীর ভালোবাসায় এই হৃদয়ে
করেছি তোমাকে ধারন ..।

ওলটপালট

একেকটা মূহুর্ত আসে,
ঝড়ের বেগে ওলোটপালোট সব।
কিছুইনা অথচ তীব্র সাধারণ কিছু ,
ঠেলে সরিয়ে দেয় আমায় এককোণায়।
একটু আগেও তো কাঁধ মিলিয়েছি,
তছনছ হয়ে গেছে সংযমের শাসন।
নতজানু হয়ে গেলে আখরের কাছে
কবিতা হয়,দাবদাহেও বসন্ত আসে।
হয়ত একনিষ্ঠ হতেই পারিনি কখনো
তোমার কাছে অথবা কবিতার কাছে।
তোমায় পেলে তবে কেন বল,
কবিতাও ভুলে যাই নির্দ্বিধায়??

প্রয়াস

প্রতিদিন, প্রতিরাত,
আনত সময়ের দীর্ঘশ্বাস।
এ কেবল আমাকে মানায়।
হাল ছেড়ে দেওয়া জীবনের দোলাচল
যে হাওয়ায় তিরতির করে চুমো খাব ভাবি,
সেখানেই ঝোড়ো নিঃশ্বাস।
অবিকল এক বিভ্রম,
মিশে যেতেই থাকে ক্রমান্বয়ে
ভাল থাকবার কৌটোয়।
ঢাকনা খোলবার যে নিশ্চেষ্ট প্রয়াস,
তাতে ঢেউ ওঠেনি আজও।
এবেলায় তাতে ফেনা-ভাতের প্রতিশ্রুতি,
আগামীতে নির্ঘাত বিপর্যয়,
সূর্য এখন আপাত শান্ত ও গতিময়।
আলো ঢালবার সময় আসেনি তার।

বড় একা

আজ ও শেষ রাতে বৃষ্টি হয়ে আমার কষ্ট ঝরে…
তুমি ফিরবে বলে তোমার পথে আজো দাঁড়িয়ে…
অনুভূতির সাতটা রং এ তোমায় আঁকি আমি…
আর কখন করবোনা রাগ ফিরে এসো তুমি…
সারাটি ক্ষন এই বুকের নীচে তোমায় লুকিয়ে রাখি…
কখনও কি আর পাব ফিরে সেই….
রিষড়ার ক্লাসিকের জলসায় তোমার দেখা….
আজ ও অনেক রাতে জেগে উঠি
এই বুঝি দিলে ফোন?
এই বুঝি এলে ফিরে,জুড়িয়ে ভাগ্যে মন …
সৃতির পাতার সাতটি রং যখন হবে শেষ…
তখন আমায় খুঁজবে তুমি হৃদয় ভাঙ্গা দেশ..
মুখো-মুখি চলার পথে হয় যদি কভু দেখা…
বলব শুধু আজ ও আছি তোমারি জন্য
আামি বড় একা…

কল্পনার আঙিনায়

তুমি আমার স্বপ্নে আসো, কাছে আসনা
ভালোবেসে চুম্বন করো, শেষ করো না
আমি জানি তুমি আসবে, ঠিক আসবে
এসে আমায় তোমার হৃদ-কোলে নেবে
তোমাকে আসতেই হবে
আমার কল্পনায় আসো বাস্তবে আসোনা
স্পর্শ সুখে ঘুম ভাঙিয়ে দাও অথচ তোমায় পাইনা
আমি জানি তোমার ঠোট আমাকেই চায়
কাছে এসে তুমি সিক্ত কর আমায়
তোমাকে আসতেই হবে
বর্শা হয়ে সিক্ত কর তবু অন্তর শূন্য থাকে
প্রখর তাপে আমায় পুড়িয়ে মার, শুধু ঠোটই ছবি আঁকে
খরস্রোতা আমি, তবু তেসুতি কেন
আমি ভয়নিবারণ, মনভিলাষ তুমি জান
তোমাকে আসতেই হবে
মনমোহিনী, সরূপিণী তুমি আমার পাকা বুড়ি
তোমার মালা চন্দনের অভিলাষী নন্দিনী, তুমি বিদুষী নারী
তোমাকে আসতেই হবে……..”
অসহায় তুমি

তুমি তছনছ করে দাও
পড়ন্ত গোধূলীর রক্তিম আভা
হৃদ বিদ্যুৎ-স্ফুলিঙ্গ নিয়ে ছুটে আস
চন্দ্রের মুখোমুখি. নীলাভ জোৎস্নার আলো
খেলা করে তোমার শরীর বেয়ে।
নীল আকাশে অগনিত তারার মাঝেে
উজ্জল নক্ষত্র হয়ে তুমি হাসো
তোমার বাতায়নে ভালবাসারা ভীড় করে।
তোমার চোখের পাতা ওঠানামায়
ব্যস্ত হয়ে ওঠে কত অজানা প্রেমিক
প্রেমের বিশালতায়, আদরের সান্তনায়।
তবু তুমি হাসো, অাবার কাঁদো,,,,,,,,,,,,,

শুনতে অবাক লাগে

আজ বড্ড অবাক হয়ে শুনলাম
তুমি নাকি ভালোবাসা খুঁজে বেড়াও ইদানিং ?
তবে ঐদিন কোথায় ছিলো তোমার আপ্রাণ চেষ্টা !
আমি তো মুঠো ভর্তি ভালোবাসা নিয়ে
তোমার দ্বারে কড়া নেড়েছিলাম !
কই সেদিন তো অন্য দিকে তাকিয়ে ছিলে ।
আজই শুনলাম তুমি নাকি এখন
স্বপ্নের পিছনে অবিরাম ছুটে বেড়াও ?
একদিন তো আমি অসংখ্য স্বপ্ন নিয়ে তোমার
দুয়ারে অপেক্ষার প্রহর গুণে গুণে ক্লান্ত হয়ে ফিরে ছিলাম ,
কই সেদিন তো স্বপ্ন ছুঁয়ে দেখলে না ।
আজই শুনলাম তুমি নাকি এখন বাঁচার জন্য
তীব্র আকুতি নিয়ে কারো বুকে ঝাপটে পরতেও ভয় পাও না ?
আমি তো বুকের পাঁজরে তোমাকে নিয়ে বাঁচার জন্য
বার বার বুকের ভিটায় দ্বার খুলে বসে ছিলাম ।
কই সেদিন তো বুকের রাজ পথে তুমি বিচরণ করতে আসনি ।
আজই শুনলাম তুমি নাকি রাত্রি জেগে একা নির্জনে
দূর থেকে ভেসে যাওয়া জ্যোৎস্নায় নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে
হঠাৎ করেই কেঁদে উঠো ?
আমি তো লক্ষ্য জোনাকি আর অজস্র জ্যোৎস্না রাত নিয়ে
তোমার মনের আঙ্গিনায় কতবার ছুটে গেছি ।
কই তখন তো তুমি জ্যোৎস্না স্নানে নিজেকে ভাসালে না ।
তবে আজ কেনো অতো কিছুর স্বপ্ন তোমার ?

অভিমান

কখনো কখনো ভাবি অভিমান করে
তোমায় ছেড়ে পালিয়ে যাব
আমিতো হলদে পাখির মতো মুক্ত
ইচ্ছে করলেই যুগল ডানা মেলে
পাড়ি দিতে পারি সাত সমুদ্দুর।
উধাও হতে পারি সাদা মেঘের রাজ্যে
বিস্তৃত নীলিমার নিঃসীম দিগন্তে।
তবুও আমি হারাতে পারি না
সহসা টান পড়ে হৃদয় নাটাইয়ের অদৃশ্য সুতোয়
যাতে আমি বাঁধা পরে গেছি।
পথে পথে যেতে যেতে মায়াবিনীর বাঁশির সুরে
থমকে দাঁড়াই, সুরলহরী শুনতে শুনতে
কখনোবা ঘুমিয়ে পড়ি ঘাসের কোলে
ঝরা পাতায়, প্রবীণ কোন বটের ছায়ায়
ঘুমের ঘোরে আমার চোখে গোলাপি রঙ স্বপ্ন ভাসে
স্বপ্নে আমি হাঁটতে থাকি
মায়াবিনীর হাতটি ধরে
প্রীতিবোধের উষ্ণ ছোঁয়ায়
উচ্ছ্বল হাসি ছড়িয়ে পড়ে, খোলা হাওয়ার ভেলায় ভেসে
মাধবীর গন্ধ এসে আমার প্রাণে জাগিয়ে দেয়
নতুন সূর্য, মিষ্টি সকাল, সতেজ আশা
এরই নাম কি ভালোবাসা ?

খুঁজে বেড়াই

কালো কালো সপ্ন ..
ভূতের মতো ..।
বাঁধ ভাঙা অশ্রু ..ভিজিয়ে দেয় মাটি ..
বন্ধ্যা জননীর
বুকের পাঁজর দিয়ে ..
কলম তৈরী করি !
তাই কবিতা কাঁদে ..।
বাঁশ বাগানের মাথায় পূর্ণিমার চাঁদ
থমথমে ..!
রাতের সাপ ইঁদুরের গর্ত খুঁজে …
আমিও খুঁজি
কবিতা .. জীবনের গর্তে ..!

অন্তহীন

এক পুরোনো ধাক্কায় আগামী
রেখে গেল ভরা শূন্যতা।
গাঢ় নীল হয়ে ওঠার প্রস্তুতি নেয়
আর একটি তারার।
গনগনে আঁচে সেঁকে নেই অবয়ব
নির্বাণমুখী আলোয়।
ঘুরপাক খাই, একলা পথের বাঁকে
তখন মুছে যায় চারিদিক।
ফিরে আসে আনমনা নিস্তব্ধতায়
একে একে সব আলো।
ধীরে ধীরে ঝিম ধরে শরীরে সন্ধ্যা নামে
যেন ঝলসে উঠে নিভিয়ে দিল।
একসময় হিম হয়ে শরীর
অন্ধকারে হারিয়ে গেল।

লক্ষভ্রস্ট

উড়াল মেঘের সাথী হয়ে
জীবনের স্বপ্ন উড়ে গেছে ।
এখন বড় জটিল জীবনের ভার
আমি আর এই আমার পথ চলা
জীবনের ভাবনা আজ অরণ্যের নির্বাসনে।
কিছু লক্ষ্য ছিলো , ছিলো কিছু স্বপ্নঘেরা বাসনা-
একটা প্রশ্নময় জীবনের ঘানি বিরামহীন
ভুলের মাশুল দিয়েছে বারবার দিকভ্রান্তের পথে ,
যে পথ লক্ষভ্রষ্ট গন্তব্যের দিকে ইঙ্গিত করে ।
জড়তাহীন নির্বিঘ্ন সুন্দর প্রত্যয়ের প্রত্যাশায়
সাজাতে চেয়েছিলাম মনের মতো করে –
আজ সেই আশা শুধুই কল্পনার আবহে আকাশে উড়ে,
হৃদয়ের যত প্রেম , যত ভালোবাসা ।
সবই আজ আমার ভাবনার ছেঁড়া জালে ।

তবু আছ

দৃষ্টিসীমায় তুমি নেই,
তবু তুমি আছ হৃদয়ের অন্তরালে
নেই তুমি সামনে
তোমার স্র্পশ ঘিরে রাখে সারাক্ষন।
যেমন তুমি কথায় নেই,
অথচ শব্দে থেকে যাও;
দুহাত জড়িয়ে
আলিঙ্গনের ভালবাসার চিহ্ন
তুমি আমার শরীরে রেখে যাও।
খোলা চোখে তুমি নেই,
অথচ চোখ বুঝলেই দেখি
প্রেমদেবী হয়ে দাড়িয়ে আছো
ভালবাসার নদীতে প্রেমময়ী হয়ে
বয়ে যাও নিরবধি
আমাকে একটু প্রেম দিতে যদি।
বালুচরী

বালুচরে একান্তে আমি নিরাশার নিরজনে,
প্রদ্বীপের শিখা জ্বেলে রই ক্ষীণ আলোয় আনমনে ।
শরতের শিউলিরা দোলা দিয়ে যায় চুপিসারে,
বিরহ অভিসার আসে আমার বাগানে ফুলের বাহারে।
সীমানা পেরিয়ে বাড়ায় কষ্টের উপলব্ধি
অব্যক্ত হৃদয়ের ভাষা আজ বড়ই অস্পষ্ট।
হারিয়ে যাওয়াদূর নিলীমায় দিগন্তের
ধূসর ওপারে কোথাও বিরহের মাঝে দুঃখ বাড়ায়।
ভুলগুলো ঐ ভুলে যেতে চাই
আদরের প্রহর-গুলো নীরবে কাদাঁয়।
কাব্য কথার লেখনীর ফাঁকি শূন্য পাতায়,
নীল বেদনা কাঁদে একাকী নীরব যন্ত্রণায়।
কষ্টের ঝালাপালার অচল পাতায় লেখনী আমার,
এলোমেলো শব্দের কাতরে পঙক্তিমালা যায় হারিয়ে।
আলিঙ্গন

দৃষ্টিসীমায় তুমি নেই,
তবু তুমি আছ হৃদয়ের অন্তরালে
নেই তুমি সামনে
তোমার পরশ ঘিরে রাখে সারাক্ষন।
যেমন তুমি কথায় নেই,
অথচ শব্দে থেকে যাও;
দুহাত জড়িয়ে
আলিঙ্গনের ভালবাসার চিহ্ন
তুমি আমার শরীরে রেখে যাও।
খোলা চোখে তুমি নেই,
অথচ চোখ বুঝলেই দেখি
প্রেমদেবী হয়ে দাড়িয়ে আছো
ভালবাসার নদীতে প্রেমময়ী হয়ে
বয়ে যাও নিরবধি
আমাকে একটু প্রেম দিতে যদি।

স্বপ্ন দেখি তাই

মরুপথে যদি আসে ফিরে
উন্মিলীত চোখে তবু জেগে থাকে
সেই স্বপ্ন দেখার ক্ষণ দেখবে বলে।
আমার স্বপ্ন সাধ পূরণ হওয়ার নয়,
আমিও স্বপ্নহীন নই ,স্বপ্ন দেখি তাই
জেগে জেগেই হারাই।
আলোয় মাখানো পূর্ণিমায় ভরা বারোমাস
সেখানে স্বপ্নেরা খেলা করে সবুজ শাখায় স্বপ্নের
বিচরণ দেখি নিরন্তর।
দুরাকাশে চাঁদের দেশে বিস্তর ভাবনার শুকনো
ডালে বাস করি আর নিজের মতো করে
স্বপ্ন বিভোরে তোমায় ভাবি
কিছুতেই দেয়না ধরা স্বপ্ন আমার।
অকৃপণ প্রহর কেটে যায় স্বপ্নেরা কাছে আসে না ,
আমার চোখে স্বপ্ন অপেক্ষায়,
অপেক্ষায় হারিয়ে যায় সেই সুদুরে।
হারিয়ে ফেলি খেই চেয়ে চেয়ে দেখি
স্বপ্নহীন মাঝে তোমার স্বপ্ন
সাধিকাদের অবাধ বিচরণ
বাহারি ফানুসের ভিড়ে
আমার স্বপ্ন হয় না উজ্জ্বল।

অভিসার

আমি স্থির অবিচল শত বিপত্তিতেও
আমার প্রেমের মূল্য আমার কাছে দৃঢ়
জোরালো ভূমিকম্পও টলাতে পারে না
তোমার আমার সেই সুখময় সৃতিপট ।
আমার সমস্ত অস্তিত্বের মাঝে
যার অবিরাম দখল- সেই তুমি
অনবদ্য ভাবনায় নিরন্তর তুমি-
আমার অন্তরকে করেছে চূর্ণ -বিচূর্ণ
তোমার অবহেলায় আমি আজ ক্ষত-বিক্ষত।
আমি তোমার ভালবাসাকে বুকে নিয়ে
স্বাচ্ছন্দ্যে পথ চলি।
আমাকে পদদলিত করে আমার অস্তিত্বকে
চরম বিপন্ন করেছো তুমি ।
তুমি আমার সারা অন্তরে বিপ্লব প্রেমের ,
তোমার সান্নিধ্য পিপাসা আমার চিরন্তন,
যাও অনেক অনেক দূরে- যাও ভুলে
তবুও আমার চেতনায় তুমি অমলিন ।
আমার সকল ভাবনায় প্রেরণার গল্প ,
নির্জনে শুধু তোমারই অভিসারের কাব্যে ।

আর্তনাত

বেলাশেষে গোধুলীর বিচ্ছিন্নতার মনোবিকাশে
চোখে ভেসে আসে আগাম অন্ধকার
দূরাভাষে তুমি ছলনার হাসি হেসে
হতাশার বীজ রোপন করো বিনাচাষে।
মেয়াদউত্তীর্ন প্রেম চুক্তির বিনিয়োগে
অচল করে দাও জীবনাবাস।
তোমার ছলনা কেউ তো বুঝেনা
ঘটে যে শুধু চৈত্রের সর্বনাশ
আড়ি পেতে বসে থাকে মনে
কি হতে কি হয়ে যায় যখন তখন।
নীল নকশার ব্যর্থতায় শঙ্কামুক্ত থেকেছি গোপনে
তোমার বিলাসী মনের গোপন কুঠরীতে জারী করো
খেলাপী প্রেমের আর্তনাদ।
প্রবণতা বাড়ছে প্রেম ও দাসত্বের
চলছে পরকীয়ার জলোচ্ছাস
সমাজের মাঝে তাই-তো বাড়ছে নিত্য আহাকার।
তোমার ছলনায় বাসা বাঁধে প্রাণ
প্রেমের অনলে পোড়াও তুমি আমার হৃদয় খানি।
আমি স্মৃতির আগুনে পুড়ে হই বেদনা সন্ধানী ।

অঙ্কুর

আমার চোখে ঘুম নেই,স্বপ্ন নেই
স্বপ্নের পলিতে শস্যদানার জাগরণ নেই
মরুভূমির করুণা তলে প্রেমের ঠোঁট মেলে
তবু চুম্বন উদ্যত মরীচিকা আমি সাহসে বুক বাঁধি
হৃদয়ের গোপন রেণু মাখি গায়ে
প্রেমিকার ভালবাসার কসম খেয়ে
সামনে দাঁড়াই এ হৃদয় আমার
এই হৃদয়ের নোনাজলে মিশে আছে আমার প্রেমের ইতিহাস
অনার্য আমি ধরাতলে গর্ভের ঘুম ভাঙাই
তৃণাঙ্কুরের স্বপ্ন জাগাই প্রেমের স্রোত
দ্যাখো আমার ব্যাথিত হৃদয়
এই দ্যাখো অামার প্রেমের শোণিতাক্ত পরিনয়
আমার স্বপ্নের কোনো রঙ নেই,
স্বপ্ন আসে শাদা-কালো দীর্ঘ জাগরণে
রজস্বঃলা রাত্রি ফোটায় মনের আলিঙ্গনে
হৃদয়ের বুক চিরে এখন দারুণ বৃষ্টির ধারাপাত।
তরী

আশার তরী ভাসিয়ে চলি নিরন্তর
নাই কিনারা দিশেহারা এই উদাসী অন্তর ।
হারিয়ে যাওয়ার চরম সুখে,
উথাল পাথাল ঢেউয়ের বুকে
ভালোবাসা শূণ্যতায় আদর সোহাগের
অনুভবের তানপুরায় আলাপ বেহাগের।
রাত্রি নামে জোৎস্নাকাশে
বেদনা বিধুর মনের মাঝে।

না পারিনি

না পারিনি আমি আর পারবোওনা
পারিনি মেনে নিতে তোমার দখলদারী,
আমি স্বাধীনতা দিতে ও নিতে বিশ্বাসী
তাও যদি পারতাম !!!
তুমি চাইতে পুরুষকার,
যদি পুরুষ হতো আমার একামাত্র পরিচয়
তুমি হ’তে তখন নারীবাদী, আমাকে দিতে শাসকের দূর্নাম।
আমি তো তোমার দৈনন্দিন প্রয়োজনে
যা কিছু লাগে সবই তো দিয়েছি
দিয়েছি তো হৃদয় দিয়ে সুখের শয্যা।
কিন্তু তাতে তোমার চাহিদা মেটেনি আর মিটবেওনা জানি
আসলে তোমার অঙ্ক টা আমি মেলাতে পারিনি হয়তো
চাবি দেওয়া ছোট্ট বেলার সে পুতুলটাকে খুঁজেছ তুমি
আমি হতে পারিনি অবর্তিন্য সেই পুতুল এর ভূমিকায়।
তোমার বেখেয়ালী ধুসর রং এর আবর্তে ফুরিয়ে গেছে সব রঙ
নিজেকে হারিয়ে ফেলেছো হিসেবী অধিকারের ফাঁদে ।
প্রশ্ন একটাই, “কি দিয়েছো তুমি আমায় ?”
উত্তর দিতে গিয়ে আচমকা থমকে গেছি
ভাবছি সত্যি তো ! কি দিয়েছি তোমায়।
সেপারেশন চাইছো ! তার মানে কি তা তুমি জানো ?
একবার ভেবে দেখো সেতো না চাইতেও পেয়ে গেছো কবে?
হে আধুনিকা – গরদের থান পরে, কতো কি করেছ
কবচ তাবিজ দিয়ে বাঁধতে চেয়েছো স্বাধীনচেতা মানুষটাকেে
একবারের জন্যেও কি কখনো মনের জানালায় উঁকি দিয়ে দেখেছো ?
জানি সেই মন মানসিকতা তোমার কোনদিনই ছিলনা।

তুমি বল

তুমি আমার থেকে অনেক দূর ,,
কতটুকু দূরে বলতে পার ?
এতটুকু দূর যেখানে আমার
স্মৃতিগুলো তোমাকে স্পর্শ করে না ,
বার বার তোমাকে মনে করিয়ে দেয় না
কেউ একজন তোমাকে ভালোবেসে ছিল,,
তার নিজের চেয়ে বেশী ।….
আজ হয়তো গন্তব্যহীন হয়ে হেটে চলছি আমি ,
কোন ঠিকানায় গিয়ে উঠব জানিনা ,,
নিশ্চুপ নিরবতায় নিথর দেহটা কালেই
হারিয়ে যাবে একটু একটু করে ,,
কিন্তু কেন এমন হল? বলতে পার ?
তা-হলে এটাই কি জীবন ?
না কি এটা একটা সত্যি কারের ভালোবাসার প্রাপ্যতা !
তুমিই বল ?

মরীচিকা

রোদ্দুর ভরা এই দিনে,
আজও আমার আকাশ জুড়ে মেঘের ঘণঘটা ।
রংধনুর আলোতে আজও বসে তুমি,
তবে বৃষ্টি শেষে আসে আঁধারেরই যাত্রা ।
ভোরের আলোয় ভিজবো বলে জেগে ওঠি আমি,
তবে তোমার অশ্রুতেই পূর্ণতা পায় ঐ শিশিরের কণা ।
হাসবো বলে অামি পাশে চাই তোমার ভালোবাসাকে,
তবে পাচ্ছি তোমায় মরিচীকা রূপে আমার বাস্তবে ।
দিন শেষে আমি আজ পথহারা পথিক,
গোধুলী সন্ধ্যা বেলা কাটে আজ আমার দিক বিদিক ।
স্রোতের তালে তালে স্বপেতে তুমি বিভোর,
ভাটার মায়াজালে আজ পাচ্ছি বালুচর ।
অনুভবের মাঝে থেকে খুঁজি স্বপ্নকে,
আজ সাদাকালোর দেশেও আসে স্বপ্ন দুঃস্বপ্ন হয়ে ।
বিষন্ন এ মন আমার আজ কাঁদে নীরবে,
সাগরের জল পূর্ণ হচ্ছে আজ আমার অশ্রুতে ।।

বৃষ্টি হয়ে ঝরব

যদি কোনো বৃষ্টি ভেজা রাতে,
তোমার চোখে ঘুম না আসে,
জানালার পাশে তুমি এসে দাঁড়িও ।
ভুল করে যদি আমার কথা মনে পরে যায় তোমার,
গ্রিলের ওপাশে দুটি হাঁত বাড়িয়ে দিও ।
আমি বৃষ্টির ফোঁটা হয়ে তোমায় ছুঁয়ে দেবো,
তোমার মনে জমে থাকা সকল কষ্ট ধুয়ে দেবো ।
ঝিরি – ঝিরি হিমেল বাতাস হয়ে
ছুঁয়ে দেবো তোমার কোমল নরম মুখ-টি ।
না হয় দমকা হাওয়া হয়ে ছুঁয়ে যাবো তোমার চুল ।
বুঝে নিও তুমি সেটি বৃষ্টি ছিলো না,
ছিলাম আমি, আমি কাঁদছিলাম,
আমার সেই কান্নার জল গুলো
বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ছে
তোমায় একটু ছোঁবে বলে ।
চুম্বন

মেঘ রোদ্দুরে ভিজে ভিজে যে প্রাসাদ গড়েছিলাম
সেটা যে স্মৃতিসৌধ কে ভেবেছিল?
তাই চোখ বন্ধ রেখেই দেখি
তুমি ধীরে ধীরে মিশে যাচ্ছ
গ্রীবা ছাড়িয়ে আরো গভীরে
নোনতা রক্ত ধারায়।
আমি গ্রীবা বাড়িয়ে আছি,
এখানে তোমার ঠোঁটের স্পর্শ পেতে চাই ।
ভেসে যাচ্ছি মেঘের শুভ্র পাহাড়ের মাঝে
আমি চোখ খোলা ও বন্ধ করার মধ্যে আছি,
আসলে দেখতে চাই
চোখ বন্ধ থাকলে তুমি কেমন করে ঠোঁট স্পর্শ কর।

শরৎ এলো

শিউলিঝরা শরৎ এলো মন ভরে যায আবেগে
কাশফুলের শুভ্রশোভা মন ভোলানো এ হৃদয়ে
সোনা রোদে আকাশ মর ভরে যায় প্রকৃতি
রঙিন হয়ে ওঠে মন যেন নব প্রেম পিরিতি
নদীর ধারে কাশবন দুলেছে কেমন টলমল
আনন্দে তাই আকাম বুকে বইছে নদীজল
শরৎ শোভার এই অবনী কেমন ঝল মল
আকাশটাতো নীলাম্বরী ছুটছে মেঘের দল
মরৎ আসে দারুন প্রবা দারুন উজ্জ্বরতায়
শিউলিমালা ভরা থাকে প্রেমের কথকথায়
প্রভাত হলেই ছুটে সবাই শিউলি কুড়াতে
প্রতীক্ষায় থাকতো দুচোখ সেই আঙ্গিনাতে
নীল আকাশে দেখ কেমন পেজা তুলার ভীড়
মন খারাপের মতো হঠাৎ বৃষ্টি ঝির ঝির।

কৌতুহল

পাঁপড়ি গুলো উন্মুখ হয়ে অপেক্ষা করে ,
ক্লান্ত পাঁপড়ি একটি একটি করে ঝরে পড়ে ।
চঞ্চল পাখি নীড়ে ফেরা ভুলে যায় ,
চাঁদ, মেঘের আড়ালে ঢেকে নেয় জোছনা ।
বিদগ্ধ চেতনায় তারুণ্য থেকে পৌঢ়ত্বে
চোখ এখন ঝাপসা -!
এখনও অনেক স্মৃতির প্রিয় মুহূর্তগুলো
একাকী দগ্ধীভূত করে ।
আমি সয়ে গেছি সব দহন জ্বালা ।
আজও ক্ষীণ হয়ে এখনও কানে সেই বাঁশির সুর
দোলা দেয় ,
থাক, না বলা কথাগুলো আমাতেই থাক ।
না জানা প্রশ্নের উত্তর নাইবা জানলাম ,
কৌতূহল জীবনটা কৌতূহলী হয়েই থাক ।

প্রেক্ষাপট

তোমার হৃদয় না ছুঁয়েও বলে দিতে পারি
এই রাত কতটা গভীর।
ঝিকমিক নক্ষত্র ছন্দে
রাত্রি শরীরে তোমার নিক্কন,
অঙ্কুশ মুদ্রায় নিবেদিত চতুষ্কোণ
উর্দ্ধে আকাশ শোনা যায় ভাসমান মেঘের গর্জন
এখন তোমার চোখের তারায় শিউলি বকুল;
এই প্রেক্ষাপটে অনায়াসে বৃষ্টি নামে
নিঃশর্ত কবিতা হয়ে।

সংলাপহীন সময়

সংলাপহীন সময়ে পথ গুলো নেমে যাচ্ছে
নদীর গভীরে
জলটা ক্রমশ কালো…..
উঠে আসছে। ঢেকে দিচ্ছে আমাদের মাটি
স্তব্ধ অরণ্য পাখি সব, নিশ্বাস চায়।
চলো শতাব্দী এসময় গল্প নয়….
পশুদের দল এখনও দাঁড়িয়ে আছে-
তোমার নিতম্ব আর সাজানো বুকে
এসো বন্ধু গভীর সঙ্গমে…..
রাত ভোর ভেঙ্গে দিই… এই মাটিতে
জঙ্গলের রাজ
তারপর দেখবো সূর্য গঙ্গার জলে।

তুমি জানতে চাওনি বলে

তুমি জানতে চাওনি বলে –
আমার স্বপ্ন সন্ধ্যায় নামেনা জ্বলেনা দীপ
তারারা করেনা লুকোচুরি
ফাগুনের বাতাসে বসন্তের রসে
রাঙায় না মন।

তুমি জানতে চাওনি বলে
আমার মনতরী তুলনা পাল,
মনের দেরাজে মেঘবালিকা করেনা খেলা,
অলিরা করেনা গুনগুন,
গ্রন্থিতে আসেনা শিহরণ,
শরৎ মেঘে পড়েনা শিশির ভেজা রোদ্দুর।

তুমি জানতে চাওনি বলে
উদাস দপুরে পাখিরা খুঁজেনা তার নীড়,
বাঁশ, ঝাউয়ের পাতা দেয়না শিষ,
আসেনা ডাহুক ডাকা ভোর,
দুই নয়নের মায়া অঞ্জনে ভসেনা
তোমার মুখ,
হয়না জোৎস্নাসিক্ত হৈমাকাশে
অবিচ্ছেদ্য প্রলাপ।

তুমি জানতে চাওনি বলে
শুধু কল্পনার আবেশে মাখা স্বপ্ন
বয়ে যায় জীবনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে;
আজও আমি তোমার অপেক্ষায়
আমার মানব মিনারে
সৌধ গড়ে যাই,
ধূলোমাখা ভোরের তন্দ্রা ভাঙা আলোয়
আর এক ভোরের প্রতীক্ষায় হাতপাতি….!
ওইশুধু,
তুমি জানতে চাওনি বলে।

তুমি শুধু তুমি

সে আমার চোখে চন্দ্র সূর্য
সে আমার বুকের পথে প্রতিনিয়ত চলাফেরা করা অদৃশ এক মানবী..!

যাকে নিয়ে আমি প্রতিরাতে স্বপ্নে দেখি
তাকে নিয়ে আমি গল্প লিখি
তাকে নিয়ে আমি কবিতা লিখি
সে সুন্দর সরলতার প্রতিমা
অদৃশ কল্পনা বিহীন এক মানবী’
সে আমাকে রেখেছে তার
ছলনাময়ী জালে বন্ধি করে…!

সে রয়েছে আমার জীবনের সাথে মিশে
সে আমার আকাশে উড়ন্ত একটা গাঙচিল পাখি হয়ে..!

আকাশের এলোমেলো সব তারা গুলো দিয়ে
আমি তার নাম লিখতে চাই
সেই হলো তুমি শুধু তুমি মায়াবী !
আমি যার জন্য অন্তত কাল ধরে অপেক্ষায় আছি
আর সেই তুমি শুধু তুমি মায়াবী !

কবিতার কাগজ

কতরাত ভেবে রাখি, আজকের ভেবে
রাখা কালকের কাগজে উঠবে ফুটে
হায় আমার কবিতা কোথায় ?
দিনের আলোতে সে মুখ লুকায়
কোনদিন তাকে আর পাব না ফিরে।
কতরাত জেগে জেগে গড়ে তুলি
অপরূপ কবিতার দেহলতা
বর্ণিল সাজসজ্জা অলঙ্কার রূপের বাহার
সরু তার কটিদেশ, উন্নত নাসা
কোমল কপোল রেশমের মতো ঠোঁট
যক্ষ কবিতার শরীর কেবলই যায়
হারিয়ে অতল বিস্মৃতির ভিতর।
দিনরাত আমার অসংখ্য কবিতা
হারিয়ে যায়, জনারণ্যে অথবা
নিভৃতে স্বপনে।

নিস্পাপ প্রেম

তোমার লুকনো আঁচলের প্রতিটি ভাঁজে
লুন্ঠিত হৃদয়ের সংখ্যাতত্বে অনীহা আমার..
তোমার দীঘল চোখের কাঁজলের গভীরে
দেখেছি নিস্পাপ প্রেমের মৃত্যু অগণিতবার।
তোমার নিটোল দেহের ছন্দে মন্দাক্রান্তার আহ্বান
রক্তকোষে মাদকতা, অজানা শিহরণ, অবিরাম স্বগতোক্তি-
তোমার স্ফুরিত অধরের রক্তিমতায় জয়ের অদম্য স্পৃহা
চুম্বন – দংশনে রক্ত পিপাসু ইচ্ছের হুটোপুটি ।

নবান্ন

নবান্নের ব্যস্ততায় ডুবে থাকে সারা দিন
একটি একটি করে ধান, সযত্নে তুলে আনে
টন টন করে উঠে বুকের স্তন
ধূলিমলিন দেহে তখনো খোকা –
হামাগুড়ি দেয় সারাটা উঠোন!
ঘরে ঘরে সোনালী নবান্ন
বিদীর্ণ বুকে পূর্ণ-জাগ্রত কৃষাণীর স্বপ্ন
অন্তরে অন্তরে নিবিষ্ট ভাওয়াইয়া সুর, ছন্দ
দূর বহু দূর ভেসে যাওয়া মধু পিঠার সুগন্ধ!
যৌবনের বৃথা রাখঢাক কৃষাণীর শতচ্ছিন্ন বসনে
কৃষাণের শ্রম-শুদ্ধ দেহে টগবগ করে প্রেম, তীক্ষ্ণ মননে
নবান্নের সোনালী খড়ে আঁচড়ে পড়া রোদ্দুর
ক্ষণকালের জন্য দূরে ঠেলে সমস্ত অভাব; দুর্মর প্রবণে
দু জনে ভাসিয়ে দেয় একটি প্রমত্ত দুপুর।
আঁচলে আগলে নেয় নাড়ি ছেঁড়া ধন
সাত সকালে হিম ধরা শীতে বাজে দন্ত কম্পন।
বারবার গলা টেনে দেখে ঊষার প্রান্ত
কুয়াশার ধূম্র কেটে সূর্য-মামা উঠবে কখন!

অপেক্ষায়..….

আজ সুপার মুনের নক্ষত্রের এই রাতে
আলোগুলো নিভে যেতো,তবে কেমন হতো !
এই যে আমি অন্য এক সময়ে দাঁড়িয়ে আছি,
এ আমি নই অন্য কেউ-
এখানে কি কেউ আছে; যে কবিতা শোনাবে আজ রাতে?
আমি বদলে যেতে যেতে কেমন করে যেন
অনিবার্য ভাবে তোমার কাছেই ফিরে আসি
তুমি কি পারো আমায় একটি কবিতা শোনাতে।
স্তব্ধ সময়ের কাছে আজ প্রশ্ন নেই, উত্তর নেই,
কেবল একটি ছায়ার দেয়ালে
কিছু অস্পষ্ট জীবন রেখার আঁকিবুঁকি।
এখানে কি কেউ আছে যে কবিতা শোনাবে আজ রাতে।
থেমে যায় ঝড় কেবল থেকে থেকে
বিদ্যুৎ চমকে ওঠে দূর আকাশে,
আর কবিতা শোনার এক আশ্চর্য আকুলতা বেড়ে চলে
এখানে কি কেউ আছে যে কবিতা শোনাবে আজ রাতে…।
সন্ধ্যার নীলে ছায়াঘেরা বাড়িটা ছেয়ে যায়
শিরশির বাতাসে ঝিরিঝিরি বৃষ্টির ছাট এসে,
ভিজিয়ে দিয়ে যায় সন্ধ্যার মুখ,
চোখের কাজল লেপটে রাত নামে,
মোমবাতির রহস্য ছায়ার দেয়ালে তাকিয়ে থাকে একমনে
কি ভাবে; কি ভেবে ভেবে যায়-
ঝড়ো হাওয়ায় সন্ধ্যার বুক যেন তোলপাড় ওঠে,
শান্ত নদীর তীরে সন্ধ্যা তলিয়ে যায় রাত আঁধার জলে
এখানে কি কেউ আছে যে কবিতা শোনাবে আজ রাতে।

নিবিড় বন্ধন

কেমন যেন সব আজ দু’ভাগে বিভক্ত ।
ভালোবাসায় অবিচ্ছিন্ন ছিলো দুজনের আত্মা
এই প্রকৃতির সবকিছুই একসময় সুন্দর ছিলো,
একই গানের একই সুর ছিলো দুজনের অন্তরা।
একটিমাত্র নিঃশ্বাসের অপেক্ষায় এখনও বেঁচেই আছি
নিঃশ্বাসের শ্বাস আমার অজান্তেই এসে পড়বে আমারই ঘাড়ে
সাথে করে কিছু এলো চুলের মৃদু স্পর্শ !
সেই আশাতে বুক বেধেঁ এখনো পড়ে আছি পূথিবীতে।
আজ আমরা অজানা মানুষ আজ দুজনের দুটি পৃথিবী ,
অজস্র অপেক্ষায় তারই বুকে মুখ লুকিয়ে সহস্র অভিযোগ
আর অভিমান প্রেমময় সংসারে ছিলো এতদিন,
তার স্পর্শ পেতে আজ এই মন যে বড়ই ব্যাকুল।
বারবার ফিরে আসে কানে সেই মৃষ্টিভাষী কন্ঠস্বর
সেই লাস্যময়ী সেই চোখ সেই আবেগ সেই দূষ্টি।
হয়তো বেশ আছি একা একা নেহায়েত মন্দ নেই
তুমিও তোমার মতো করে বেশ আছো-জানি,
সাবলীল কেটে গেছে অনেক বসন্ত , অনেক
কষ্ট হয়তোবা ছিলো আনন্দওবা কম কী ছিলো কিসে?
কথা আর অ-কথায় ভালবাসার রাজ্যে আমরা দুজন প্রেমী
শুধুই প্রেমে সময় যেত হারিয়ে একই জীবন তীরে নিবিড় বন্ধনে
আজ ওপাড়ে তুমি আর এপাড়ে আমি নিস্ব হয়ে করি যন্ত্রনাবাস।

সংকেত

সামনে দাঁড়িয়ে, ও দাগ
পাবেনা দেখেতে
মুখের দাগ নিয়ে ভেবে সারা হ’চ্ছো ?
বুকের গভীরে যে দাগ বেঁধেছে বাসা,
চেষ্টা ক’রলে দাগ কে চিত্রিত ক’রে
আঁকতে পারতে কোনো এক গুহাচিত্র।
আগামীর কাছে রেখে যেতে পারতে
কোনো এক সংকেত….।
লাবন্য

চোখে বৃষ্টি নামবে জানি,
আগুনের তপ্ত শিখা শীতল সাগর ছোঁবে,
ধ্রুব তারা তখন খসে পড়বে, শেষ হবে
অন্তিম যন্ত্রনা, একতারায় ছুঁয়ে থাকবে জীবন।
কী ভীষণ অনশনে কেটে যাচ্ছে ক্ষণ,
সহস্র কাহিনীর স্মৃতিটাকে ঠাঁই দিলাম-
সেই অবুঝ হৃদকাশে। অচিনপুরের দেশে।
সাদা মেঘের লাবণ্য মুছে গেছে সহসা
মনের সিঁড়িতে খেলে যায় অস্থিরতা।
বাঁচার অভ্যেস আমাকে বাঁচিয়ে রাখে
ঋতুর বৈরিতায় অভ্যস্ত এই আমি,
হৃদয়ের দেয়ালে মন রেখে ভাবি
শত অতীতের মাঝে তোমার মুখ খানি।
মসৃন তোমার আলগা হাতের ছোঁয়া
দূর আদিগন্তে মিলেমিষে একাকার
বোবা আকাশ, অবুঝ পৃথিবী, একা আমি।
বরণ

চেয়েছি পাশে
সাগরের প্রবল ঢেউয়ের ছন্দে ।
সূর্য ডোবার শেষ সাক্ষী হয়ে
বরন করতে চেয়েছিলাম তোমাকে
উৎসবের মধু-ময় সময়গুলি
উৎসর্গ করেছি তোমাকেই।
তোমাকেই চেয়েছি তোমার উচ্ছ্বাসহীন
অন্তরে বিতাড়িত হয়েও,
তোমার তীব্র প্রত্যাখ্যান তোমাকেই পেতে
আমাকে প্রেরণা জোগায়।
আমি কখনোই তোমার অনীহার বিপরীতে
জোর করে চাইনি তোমায় ।
অনন্তহীন সময়ের সাথী হিসেবে তোমাকে চেয়েছি
মুক্ত আকাশে মেঘের খেলায় ,
প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের কাছে চেয়েছি তোমায়
রক্ত তারুণ্য শুধু তোমাকেই কেন
আমার সন্মুখে বারে বারে দাঁড় করায় ।
বিধ্বস্ত মননে তোমার সরব উপস্থিতি
আমার মনের বিদগ্ধ অনুভবে চিরঅম্লান।
নীরবে ঘুমাও তুমি চোখের ঘুম কেড়ে নিয়ে
রাতের নির্জনতায় একাকী আমি প্রহরে গুনি।
তোমাকে চেয়েছি দহন পীড়নে শ্রান্ত আমার
ক্ষণিক চেতনার পূবআকাশে।
অরণ্যের রূপে নীল সবুজের ঠিকানায়
শুধু তোমাকেই চেয়েছি আমি
তোমার আমার হৃদ-কাব্য রচনার প্রাক্কালে ।

যন্ত্রণা

প্রতিটি ক্ষণে, প্রতিটি মূহুর্তে
হাসিমুখ, হাসিমুখে আনন্দধারা।
তুমি চেয়ে আছ তাই, আমি দুরে চলে যাই,
বহুদুর, বহুদুর চলে যাই।
চাদঁ উঠে গেছে নীল আকাশে
জোৎস্না এসে থেমে গেছে তোমার জানালায়,
হারিয়ে যেতে চাই, তোমার মনের আঙ্গিনায়.
হারিয়ে যেতে চাই, তোমার ভালবাসার ভাবনায়
অনেক স্বপ্নের ভীড়ে একান্ত নিরবতায়,
আনন্দ উৎসব আছো তুমি সবার সাথে
শুধু নেই আমি তোমার কাছে……
তুমি চেয়ে আছ কোন দুর অজানায়,
আমি খুজে ফিরি শুধু তোমার স্মৃতির যন্ত্রনায় …..।

তুমি কি আসবে না ?

বাতাসে উড়িয়েছ আশা,
মাটিতে ছড়িয়েছ আশ্বাস,
সমুদ্রের ঢেউএ জাগিয়েছ আবেগ,
আর সবুজ বনানীতে প্রেম ।
আশা, আশ্বাস, আবেগ, আর প্রেমে ভেসে ভেসে
আমি তাই শেষ ট্রেনের পথ চেয়ে রোজ ।
আজও শেষ ট্রেন হুইশেল বাজিয়ে চলে গেল
তুমি নামলেনা,
কাল নয়, পরশু নয় ,কিম্বা তার আগের দিনও না,
তুমি কি আসবে না?
ধর যদি নাই আসো, চিঠিতো দেবে?
ধর যদি চিঠি নাই দাও, ফোন তো করবে?
ধর যদি ফোন নাই কর, ভুলে তো যাবে ?
কিন্তু তুমি ভোলনি…….।

মুক্তি

চাইলেই কি কাউকে ভুলে যাওয়া যায়
হয়তো যায় আমি ভুলে গেছি তোমায়
শুধু কিছু স্মৃতি রয়ে গেছে মনের মাঝে
হয়তো এই স্মৃতি গুলো একদিন ভুলে যাবো
ভুলতে না চাইলেও ভুলতে হবে যে আমাকে
কেন জানো স্মৃতি গুলো আর
থাকতে চায় না আমার কাছে
আমাকে মুক্তি দিতে চায়
তোমার এই স্মৃতি গুলো ।
জানো কেমন করে জানি
তোমার রেখে যাওয়া স্মৃতি গুলো জেনে গেছে
আমি আর বেশী দিন নেই এই ধরণীর বুকে ।
তাই ওরা আমাকে ছেড়ে চলে যেতে চায় বার বার ।
কি অদ্ভুত দেখো আমি এতটা দিন
তোমার স্মৃতি গুলো বয়ে বেড়িয়েছি
আজ আমি কারো কারো কাছে হারিয়ে যাওয়া
একটা স্মৃতি হয়ে বেঁচে থাকবো ।
কি অপার লীলা-খেলা এই ধরণীর ।
কোন অপবাদ আমি দেবনা তোমাকে
মুক্ত করে দিয়েছি তোমাকে আমি
আমার হৃদয়ের গহীন আর লুকিয়ে রাখিনি তোমাকে ।
অনেক আগেই তুমি চলে গেছো
তবুও আজ অরেকবার বললাম যত দূরে যেতে চাও
চলে যাও বাঁধা দেব না আমি…..।

অসমাপ্ত কবিতা

বারুদের স্তূপে বসে আকাশের গান শুনি
মধ্য নিশীথে ধ্রুবতারার সাথে সদ্য উৎপাতিত তারাদের গুনি
সংযম আর কত, কত ফুল অকালে ঝরলে এ মরণ খেলা সাঙ্গ হবে!
হয়তবা আমার ও মরণ সলিলে,
নীরবে পৃথিবীর বুকে পরে থাকবে শুধু আমার পদ চিহ্ন
সাহুকারেরা আমার শরীর টাকে করবে ছিন্ন ভিন্ন
আবার কেউ নন্দিনী হবে, আবার নতুন অঙ্ক কষবে
জীবনের অসমাপ্ত কবিতা পুনরায় লিখবে।

অনির্বাণ

বেরিয়ে পড়ল অনাদ্রিতা
ঘন অন্ধকারে পাশের মানুষটাকেই চেনা যখন দায়,
তখনি তুলসি তলায় বাতি দিয়ে গেল সময়।
ঝোড়ো বর্ষায় ভেজা বঁড়শিতে মাছ তুলেছে অনির্বাণ।
ছিঁড়ে যাওয়া পাতার ওপরেও অনায়াস বসে থাকা পিঁপড়েটা
আঁকড়ে ধরল বুক।
রক্তপাতের অপেক্ষায় বসে থাকা আর একজন
সরিয়ে নিল থালা।
আজ আর আহারের প্রয়োজন নেই,
রক্তপাতে পূর্ণ হয়েছে জীবন।
অজস্র ঢেউ জলের কাছে
কী যন্ত্রণায় মরছে আহা ! নদী !
চৈত্রবাতাস, তুমিও পোড়ো
ধুলোর উঠোন থমকে দাঁড়ায় যদি…
হৃদয় জুড়ে বৃষ্টি তুমুল
আমি তবু আকাশে মুখ ঢাকি
যখন তুমি পোড়াও, পোড়ো ;
দহনজ্বালায় চুপটি করে থাকি।

নিয়ে চলো

এক আকাশ ওড়না ভিজিয়ে
চমকে দিতেই, কণ্ঠস্বরে ভেসে এলো আদিম তান।
একলা হওয়া এমন দিনে যে সুর উঠলো বেজে
অভিমানী হাওয়ায় দিলেম তাকে ভাসিয়ে…
বলেছিলাম, খুঁজে নিয়ে এসো রঙ্গীন ঠিকানা।
কালো চুলে হাত বুলিয়ে বললাম…
নিয়ে চল আমায় মেঘের গভীরে,
তোর গভীরে, আলোছায়া বাসে মেঘ বলেছিল
এখন প্রদীপ নিভু-নিভু,
আর তুই জানালি, নিভে গেলেই যে অন্ধকার,
তার ওপাশে ভাললাগার গান নাকি আরও সুন্দর।
আমি ডুব দিলাম তোর গভীরে…
বৈঠা ছাড়াই।

কুমারী গর্ভবতী

মেঘ বারবার বল্লো আকাশকে –
আমি জানি কে আমায় গর্ভবতী করল,
মুক্ত আকাশের এক কোনে নেমে এসেছিল
খন্ড খন্ড শুভ্র মেঘের ভেলাগুলো…..
আকাশে উড়ছিল নানা রঙের পাখি ছন্দহীনের মত
দুপুরের কড়া রোদ হাতছানি দিচ্ছিল বিকেলকে
হঠাৎ নেমে এল সন্ধ্যা তার মোহনীয় রূপ নিয়ে
ঠিক তখনি মেঘটা লজ্জাহীনা হয়ে গর্ভবতী হল ।
ঝড়ে পড়লো সীমাহীন এই পৃথীবীর বুকে….
সব ধুষিত রক্ত ধুয়ে দিয়ে পবিত্র করে দিল এই ধরাতলকে…
পাপ মোচনের উছিলায় ঝর ঝর বৃষ্টি নামলো।
নিবিড় স্নেহবন্দী হয়ে মেঘ ভুলে গেল তার কুমারীত্ব!
জীবনের কলঙ্ক রয়ে গেল তার সীমান্ত জুড়ে ঠিক হৃদয়ের মধ্যখানে
সমাজ ছিঃ ছি করলো, নরম সকালের রোদটাও এড়িয়ে গেল মেঘকে
শুধু আকাশের বুকে নানা রঙের পাখিগুলো তখনও উড়ছিল
উড়ছে আর মেঘকে মুচকি হেসে বলছে
এস মেঘ তুমিও পাখি হয়ে যাও,
গর্ভবতী হবার ভয় থাকবে না……..
সীমাহীন লজ্জা তোমার থাকবেনা
মানুষ মানুষকেই লজ্জিত করবে
সত্য প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করো ……।

মাশুল

সত্তা আর অস্তিত্ব মিলে
হৃদয় আগুনের ফুলকিতে খুঁজি চরম আপেক্ষিকতা,
মন মাতানো প্রলোভনে
দুঃখের পরিমাপ শনাক্ত করতে গিয়ে
ছন্দের কাশবনে হেলে দুলে ভুলের মাসুলে নিজেকে হারাই।
মনের কৌশলে তোমার অস্তিত্বে ফোটে রাতপদ্ম
শরৎ এসেছে স্বপ্ন বিষন্নতার আড়ালে
সংগোপনে তুমি সমৃদ্ধ করেছো
সীমাবদ্ধতার অবাধ্যতা।
আমি সামাজিক জাতাকলে
বাকি সত্যতার কাছে রাখি মনষ্কতা
হৃদ বন্ধনের তত্ত্বমিল তোমার অজান্তে
করে বিরল দস্যুতা বেলাশেষের গানের কলি
গেয়ে ওঠে গৌধুলির পাখি।
প্রেম তোমার মোহের কাছে আমি হার-মানিনি
শর্তমেনে ভালবাসার ঘাটতি পূরণে
তুমি আবেগের ভাগ বসাও
আমার হৃদয়ের কোনে।
নৈঃশব্দের দুঃখ অবসাদে
সন্ধ্যা ও প্রভাত ধরা দেয় মনে
একাকিত্ব বোবাস্বরে বেদনার ঘরে
বাজেয়াপ্ত করে দ্বিধার তুলনা
তুমি শংকামুক্তির বিফলে
প্রেমের কপালে লিখো আমার ভবিতব্য।

প্রথম আলো

একফোঁটা অন্ধকারে কতটা ক্ষত সারে…
চক্রবৃদ্ধি হারে,
একাকিত্বে ক্ষয়ীষ্ণু হৃদয় গুমরে কাঁদে-
কষ্টরা নিঃশ্চুপ পায়ে এসে
কড়া নাড়ে মনের দুয়ারে
প্রবঞ্চনা কুঁড়ে কুঁড়ে খায়
হৃদপিন্ডের জীবনী শক্তি।
এভাবেই শুরু হয় কবিতার প্লাবন
আর বিবর্ণ নদী জুড়ে ভেসে চলে
গ্রাম্য কবিদের মৃতদেহ…
যেন চির দোসর হয়ে আছে অনন্ত কাল,
থাকুক ক্ষতি নেই আর আজ।
যা হয়ে যায় ভাদ্রের গর্ভিনী নদী ।
একগলা জলে দাঁড়িয়ে
ভিক্ষা চাই তোমার কাছে দেবী,
দাও গ্রাম্য কবিতার ভাষা ।

বেলাশেষে

সত্তা আর অস্তিত্ব মিলে
হৃদয় আগুনের ফুলকিতে খুঁজি চরম আপেক্ষিকতা
মন মাতানো প্রলোভনে
দুঃখের পরিমাপ শনাক্ত করতে গিয়ে
ছন্দের কাশবনে হেলে দুলে ভুলের মাসুলে নিজেকে হারাই।
মনের কৌশলে তোমার অস্তিত্বে ফোটে রাতপদ্ম
শরৎ এসেছে স্বপ্ন বিষন্নতার আড়ালে
সংগোপনে তুমি সমৃদ্ধ করেছো
সীমাবদ্ধতার অবাধ্যতা।
আমি সামাজিক জাতাকলে
বাকি সত্যতার কাছে রাখি মনষ্কতা
হৃদ বন্ধনের তত্ত্বমিল তোমার অজান্তে
করে বিরল দস্যুতা বেলাশেষের গানের কলি
গেয়ে ওঠে গোধুলির পাখি।
প্রেম তোমার মোহের কাছে আমি হার-মানিনি
শর্তমেনে ভালবাসার ঘাটতি পূরণে
তুমি আবেগের ভাগ বসাও
আমার হৃদয়ের কোনে।
নৈঃশব্দের দুঃখ অবসাদে
সন্ধ্যা ও প্রভাত ধরা দেয় মনে
একাকিত্ব বোবাস্বরে বেদনার ঘরে
বাজেয়াপ্ত করে দ্বিধার তুলনা
তুমি শংকামুক্তির বিফলে
প্রেমের কপালে লিখো আমার ভবিতব্য।

মায়াবী স্রোত

কী অসম্ভব নেশা জড়ানো
কী নির্লিপ্ত চাহনি শান্ত মাধুর্য
যেন এক প্রেমময় মহাকাব্য ।
কখনও মনে হয় আনন্দের ঝর্ণা ধারায়
অনিন্দ্য সুন্দরী প্রণয়িনী ।
আবার কখনো বেদনায় ভরা মায়া মাখানো
এক বিষাদ সিন্ধু।
হোক নিশ্চিত তোমার চোখে আমার সমাধি
কল্পনার দৃষ্টির সুখকর কামনায়।
অমরত্বের বর চাইনা আমি-
অসম্ভব সুন্দরের গভীরতায় নিজেকে বিসর্জন
দিয়ে অপ্রাপ্তির সুখ নিতে চাই ।
নীল সাগরের অতল গভীরতায় নির্বাক
নিষ্পলক চোখের তারায় যেন হৃদয়ের পিপাসা
ঠিক যেন অনির্বচনীয় অমৃতের আহ্বান
নীরব চাহনীর মাঝে যেন উত্তাল কোলাহল
দু’চোখের পল্লবে।
তোমার নিখুঁত দৃষ্টির স্বচ্ছ সলিলে
জীবনের না পাওয়া সব আকাঙ্ক্ষা মিশে যেতে উন্মূখ,
সম্বিত ফিরে পায় বদ্ধ মাতালের নেশা
থমকে দাঁড়ায় পাষাণ হৃদয়
তোমার চোখের পানে চেয়ে স্নাত আঁখি পল্লবে।
অশান্ত ঝড় থেমে যায় হঠাৎ
তোমার চোখের মায়াবী স্রোতে
চকিতে যৌবন উশৃংখল হয়
এক পলকেই ।

সময়ের সীমান্ত

আমার জন্যে সময়ের সীমান্ত
অতিক্রান্ত করা বড় কষ্টের
আটকে আছে শক্তমতো
সময় আমার কোথায় যেন।
মৃতপ্রায় জীবনের স্মৃতির গ্রন্হিগুলি
শিথিল হয়ে অবশ করে ফেলেছে আমায় ।
সচল পৃথিবী থেকে কে যেন বিচ্যুত করেছে
আমার রথের চাকা গেছে থমকে।
আমার সময় আজ স্থির অবিচল
হিমালয়ের দৃঢ়তায় সামনে দাঁড়িয়ে
নিজেকে আজ বেশী অসহায় মনে হচ্ছে
সুদুরে হারিয়ে যাওয়া তোমাকে খুব বেশী
মনে পড়ছে।

তুমি কি পারবে না

তুমি কি পারবে না স্বর্গের অপ্সরী
ফিরিয়ে দিতে ভোরের আলোয় ¯স্নাত শিশির ?
বলো আর কতকাল রাখবে এভাবে
কতটা প্রহর থাকব আমি নিদ্রাহীন ?
না-কি সুখের ছোঁয়ায় তুমি চেয়েছ
আমি পাথর হয়ে থাকি ?
মনে পড়ে তোমার স্বর্ণ খচিত মানচিত্রে কিছু স্বপ্ন
তৈরী করেছিলাম মধ্যরাতে তুমি আর আমি-
অাজ হৃদয়াকাশে বৃষ্টি ভেজা মলিন পৃথিবী
আমি সবুজ ঘাসে একখন্ড পাথর হয়ে আছি।
ঝাঁক ঝাঁক বলাকারা ওড়ে যেত
সবুেজর প্রান্ত সীমায় ঘন কুয়াশায়।
চোখের তারায় ছিল তোমার আকাশের সবটুকু নীল
সেই নীল তুমি আজ তুচ্ছ করে দিয়েছো বিলীন….।

বলতে পারো কবিতা

কবিতা তোমার চুলে শ্রাবনের মেঘ জমে আছে
জোসনারা ছেয়ে গেছে মেঘের নিকষ অন্ধকারে
হারিয়ে গেছে অতলান্তে জীবনের কুল।
যদি পুর্নিমা ছুঁয়ে যায় এই রাতে, জানি ঠিক
ফিরে পাবে মেহনার ঘাটে ।
এখন আমি আর কাঁদিনা শরতের রাতে
সারারাত গায়ে মেখে বৃস্টির জল
ব্যর্থ মন কালো মুখ হয়ে
ফিরে যায় কষ্টের দলে।
অশ্রুরা স্নান শেষে হেসে ওঠে
দিনের আলোয়।
কবিতার মাঝে শরৎ মেঘের জড়াজড়িতে
সাজঁবেলায় কেশের চুড়ায় মেঘের বাড়ীতে
সৃষ্টি খেলায় শরৎ নামে গোপন সন্ধিতে।
ওগো তুমি কি গিয়েছো আকাশপুরে ?
তোমার দেহে কেন এত শরৎ নামে
বলতে পারো কবিতা !

মেঘলা প্রহর

মেঘলা প্রহর প্রহর দুপুরে শ্রাবনের ধারা বরষে,
কৃষ্ণচূড়া ঝরে সমাধি পরে বেলাশেষে।
নিভৃতে আনমনে ঝরে ঝরে গেছে ফুলেরা,
একেলা বউ কথা কও ডেকে ডেকে দিশেহারা।
মউ মউ ঘ্রাণ সরিষা ক্ষেতে হলদে বরণ দুপুরে,
গাঙ ফড়িং এর চঞ্চল নাচ শাপলা-কমল এর পুকুরে।
ঘাসের চাদরে টলমল বৃষ্টিজল মাতোয়ারা,
জলের আয়নায় আকাশের ছায়া, মুখ দ্যাখে গাছেরা।
শুকনো পুষ্পবৃন্তে লেগে থাকে ফুলকুঁড়ির আশা,
ফুরায় প্রেম, সব চাওয়া-পাওয়া,
ফুরায় না ভালোবাসা।।
আগামীর উপহার

ফেরিওয়ালী সেজে ফেরি কর তোমার যৈাবন
দুটি স্তনের মাঝে গভীর উপত্যকার নির্জলতায়,
বুক খুলে হাসে কত নিষ্ঠুর হায়নারা
নিরুপায় তুমি, যোনীতে যোনীতে
গেঁথে রেখেছো চকচকে বর্শার ফলা,
প্রতিরাতের হিংস্র উম্মাদনায় প্রেমহীন উৎসবে
তোমার রষায়িত রজনীগন্ধায় লাগে রক্তের ছিটা।
নিশ্চুপ ভাবে সহ্য করে যাও, ঠোটের কোনে হাসির রেখা টেনে
যে হাসিতে রয়েছে শুধু ছলনা বিদ্রুপ অসহ্য যন্ত্রনা;
মিশে থাকে ঔরসের উপহারের রসায়নে
তুমি কুমারী হয়েও নশ্বর করে ফেলো তোমার যোনীদেশ ।
সঙ্গম শেষে বাথরুমের কুৎসিত আয়নাকে গিয়ে প্রশ্ন করো
এ তুমি কোন তুমি ?
কুমারী ? সধবা ? বিধবা ? নাকি নেহাতই মেয়েছেলে ?
তুমি কুমারী তবু অনাঘ্রাতা নও
শোধ করো নারী জন্মের পাপ
রোজ অতীত হয় তোমার বেঁচে থাকা ।
নিষিদ্ব পল্লীর মরচে পড়া জানালায়
মুক্তি চাও মুক্তি খুজো প্রতিনিয়ত…..
চোখে পড়ে শুধু অশ্লীল কাম , আবিষ্কার করো
মরচে পড়া সেই জানালায় তোমারই প্রতিবিম্ব ।
কত রাত জাগা যুদ্ধের প্রহার ছেয়ে আছে শরীলে তোমার
কত সফল যুদ্ধের স্মৃতি ঘুমোট ঘরে আছে ছড়িয়ে
কলি হয়ে জমা হয়েছে কত শত বেদনা তোমার নারী গর্ভে
কোন কলিকেই তুমি দাওনি ফুল হয়ে পরিস্ফুটিত হতে
কত নিশ্বপাপ কলিকেই ঝড়িয়ে এসেছো নির্বিবাদে
কোন এক নাসিংহোম এর ক্লিনিকে ।
দু ঊরুর মাঝে কতবার চালাতে দিয়েছো তুমি?
মূল্য হিসাবে পেয়েছো একটি কন্যা সন্তান , যে কিনা
হবে ‘আগামীর তুমি’ তবে
কুমারী জীবনের যন্ত্রণা ওকে দিও না
উপহার দিও তোমার আগামীকে
তার সম্পূর্ণ নিজের একটা পুরুষ
যাকে মর্জি মাফিক ছিন্ন ভিন্ন করতে পারবে ।

মনে পড়ে

জীবনটা অপূর্ণতার
আঘাতে হোচট খায় বারবার ৷
বিশ্বাস করো প্রিয়তমা তোমাকে ঠিক
ততোটাই ভালবেসেছিলাম, অনেকেই এর
আগে পারেনি কেউ ।
জানি না কতটা নেশায় চূড় হয়ে আছি আমি ৷
হয়তো অ্যালকোহলেও অতটা মাদকতা নেই,
যতটা ছিল তোমার প্রেমে ৷
তুমি আসবে বলে আমার প্রতিটা প্রহর কাটে অপেক্ষায়,
প্রতীক্ষার এই দীর্ঘ লগ্নে, আজ ভীষণ ভীষণ ভাবে
মনে পড়ছে তোমাকে, শুধু
তোমাকেই…।
আমার মৃত্যু

আমার লাশের পাশে রাখা
আগরবাতির ঘ্রাণ,
তোমাকে ঘুমাতে দিবে না,
তুমি ঘুমাতে চাইলেও পারবেনা,
আমার স্মৃতি গুলো চারিদিকে শুধু,
তোমায় ডাকবে।

এই ভাবে কেটে যাবে
বছররের উপর বছর খানি,
একদিন তুমি বুড়ি হবে,
তোমার চুল পাকা ধরবে,
তোমার হাতে লাঠি থাকবে,
একদিন তুমি ফিরে এসো সেই পথে,
যে পথে আমার মৃত্যু হয়েছে।

তখন হয়তো তুমি মুক্তি পাবে,
আমার আত্মার স্বাদ মিটবে,
আমার আত্মা হবে তখন মুক্ত,
আমি থাকবো অপেক্ষায়
পরো জনমের জন্য।

এই জনমে তো তুমি আমার হলেনা,
পর জনমে মনের মানুষ হয়ে,
দুজনে আবারো জন্ম নিবো,
এই সুন্দর পৃথিবীতে।

ভরবে না মোর মন

ইট পাথরের রুক্ষ প্রান্তর ধরে হাঁটছিলে তুমি,
নিশ্চিন্তে, সাবলীল পদক্ষেপে।
ধুধু নির্জন পথ,
দুপাশে আকাশ ছোঁয়া ইমারত,
বিষন্ন সূর্যটা দেখছে তোমায় আক্ষেপে,
বুঝিবা তোমায় প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবছে।
দেখেও দেখলে না তুমি আমাকে,
হয়ত পথের আবর্জনা ভাবলে।
তারপরই থেমে গেল পদক্ষেপ,
নিশ্চিন্ত সাবলীল পদক্ষেপ।
অঙ্গে তোমার বাঁশীর সুর, সুরেলা যৌবন,
আঁচলে ছড়ানো মিষ্টি নিক্কন।
আঁচল টানলে তুমি ভাল করে-
আরো ভাল করে।
ভাবছ বুঝি হিসেব মেলাব?
আঘাতে আঘাতে ভাঙ্গবে তোমার বাঁশীর সুর?
নিশ্চিন্তে হেঁটে যাও সুরেলা।
তোমার ভালবাসা আমার
জীবন ভরাতে পারেনি,
তোমার দেহে আমার
মন ভরবে না।
মরুভূমির ন্যায়

প্রেমহীন জীবন যাপন,
মরুভূমিতে রাত্রিবাসের মতন,
অসহনীয়,ঝঞ্ঝা লাঞ্ছিত যেমন।
নবযৌবনের এত উদীয়মান কবি,
লিখে চলেছেন তাঁদের কবিতায়,
তাঁদের মনের কতনা প্রেমের ছবি,
সে মন কি ফিরে পাব এখন,
যতোই নিজেকে তরুণ ভাবি।
তবু প্রেম তো রয়েছে মনে,
রেখেছি সযতনে ও সঙ্গোপনে,।
কুয়াশা যতোই পরিণত হোক ,
আশ্রয় নেবে ঐ মেঘেরই বুকে,
নব-উদ্দমে বৃষ্টি রূপে আসবে ফিরে,
আবার কুয়াশার জন্ম হবে ।
আমিও কুয়াশা মেঘের মত,
প্রেমেই ডুবে রয়েছি অবিরত।
প্রকাশ পাবার নেই অবকাশ,
হৃদয়ে যে রয়েছে নীরবে ,
পাই না সেই আশ্বাস।
প্রেম নাকি জীবনে আসে একবার,
তাই প্রথম প্রেমই প্রেম,আর সব মেকি,
কিন্তু সেটাই প্রকৃত সত্য কি ?
আসলে সব প্রেমই প্রেম যতবার আসুক,
এ তো নয় কোন হুজুগ বা অসুখ।
প্রেম স্থির,সুন্দর,অখন্ড,জীবনের স্বাক্ষর,
জীবনই তো প্রেমময়, তাই চিরভাস্বর।
কেবল মানুষেই নয়,এ যে প্রকৃতিময়,
তাই সর্বত্রই দেখি কেবল প্রেমেরই জয় ।

সুযোগ করে দাও

সব দুঃখ, লজ্জা উড়িয়ে দিয়ে
সবুজ গালিচা বিছাতে চায়
ওকে একটু সুযোগ করে দাও।
পাহাড়ি ঝড়ো হাওয়া
তোমার জানলা খোলার অপেক্ষায়
ওকে যাওয়ার পথ করে দাও।
জমাট হয়ে থাকা পুঞ্জিভূত বেদনাগুলো
উড়িয়ে দিতে চাইছে
কোনদিন সূর্য আসেনি ঘরে,
ওকে একটু সুযোগ করে দাও
ভেতরে জমে থাকা বরফ
যা দিনে দিনে হিমবাহ হয়েছে
ধুলোর পরতে জমাট হয়ে থাকা
জানলার কপাট দুটো খোল।
জানি খুলতে খুব কষ্ট হবে তোমার
ঘরের ভেরতটা ভীষণ ঠাণ্ডা, নিরুত্তাপ
সূর্যকে যেতে দাও তোমার ঘরে।
পুজারিনী

অন্য এক দিক… ভূমিকম্পের প্রস্তুতি,
পুজারিণী সদ্যস্নাত এলো চুলে মৃদু হেসে
নোনা শরীরে আহ্বান জানালো আলিঙ্গনের।
দূরবর্তী এক নদীর স্রোত, উচ্ছ্বল ঝরনার মত
ঝাপিয়ে পড়লো গায়ে, পূজারিণী ভিজল,
কিন্তু তার বসন ভিজল না।
এক লপ্তে সমস্ত দ্বিধাকে পিছনে ফেলে
হাঁটতে সেখায় পূজারিণী, গোপন সময়ে
কিম্বা নিকষ কালো অন্ধকারে,
বনাঞ্চলে পূজারিণীর একক আগমন
নীরব বনাঞ্চলে তার অধিবাস।
বিজিত আর জয়ী তফাৎ খুঁজে ফেরে তার বুকে।
অবলীলায় জীবনের সুক্ষ্ম বোধ কাঁপিয়ে তোলে বুক।
তিরতির করে কাঁপতে থাকে ঠোঁট।
কিছুকাল পরে নদী এসে দাঁড়ালো তার সম্মুখে,
নদীর আহ্বান… ছটফটে নদী বলেছিল
‘এসো, আজ ভেজাই তোমায়, সম্পূর্ণ স্নানে।
আপাত ছলনায় স্মিত হাস্যে পূজারিণী অস্বীকার করল
পুজারিণী উত্তরে বলল,
‘এ স্নানে আর ইচ্ছা বেঁচে নেই, ছিটানো জলেই যে ভিজেছি মনে মনে।’
পূজারিণী আবার পিছু ফিরে, মিশে গেল বনান্তরে,
নদী তার গন্ধ এখনও পায়,
স্নাত হয় নিঃশ্বাসে, তবু নাগাল পায়না তার।

সেই কবে থেকে

পৌরাণিক যুগে শুরু হয়েছিলো জানিনা
পাতায় পাতায় রং বেরং এর উজ্জ্বল কাহিনী
আমি এখানে বড্ড বেশী বেমানান!
হাত বাড়ালাম অচেনা এক কাব্যের পথে
বর্ণময় শব্দের ভিড়ে আমার ভাঙা কলম কালিহীন
শব্দহীনের মাঝে খুঁজে পাচ্ছি না নিজেকে
মনে পড়ছে না আমার পূর্বজন্মের কথা
আমি কি চর্যাপদ থেকে এসেছি?
পদাবলী? না কি? মঙ্গল কাব্য?
তা আমি জানিনা
নিজেই এসেছি নাকি কোন পথভোলা মন
আমাকে নিয়ে এসেছে এখানে
সামনে রোদের ঝলমল মলাটে
এক বিশাল কাব্য গ্রন্থ
ফিরে যাওয়ার জন্য পিছু ফিরতেই দেখি
যে ধুঁসর পথ ধরে এসেছিলাম
কোন এক ছলনামযীর গুপ্ত মন্ত্রে তা উধাও,
সেখানে প্রাগৈতিহাসিক নিকোষ গাঢ় অন্ধকার
দ্বিতীয় কোন পথ নেই আর
আমি ছুটে চলেছি অনন্তকাল
কোন গন্তব্য নেই।

Leave a comment